কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে মহাসম্মেলনের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিষয়:

প্রেসক্লাবে সম্মিলিত খতমে নবুয়তের সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশে কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণাসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত খতমে নবুয়ত পরিষদ। তাদের মতে, কোরআন ও হাদীসের অকাট্য প্রমাণের ভিত্তিতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই শেষ নবী ও রাসূল। তারপর যে কেউ নবুওয়তের দাবিকারীরা মিথ্যুক ও প্রতারক। দাবি আদায়ে আগামী ১৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

আজ বুধবার (০৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক এবং খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশ'র আমীর আল্লামা আব্দুল হামিদ মধুপুর এ দাবি জানান।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। এ দেশের নব্বই শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী মানা ইসলাম বিরোধী। তাই কাদিয়ানিরা মুসলমান হওয়ার প্রশ্নই আসে না, বরং তারা অমুসলিম কাফের। কিন্তু আজও রাষ্ট্রী-য়ভাবে তাদেরকে সংখ্যালঘু অমুসলিম ঘোষণা করা হয়নি। এর ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, আইনশৃঙ্খলার অবনতিসহ নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।”

আল্লামা আব্দুল হামিদ মধুপুর বলেন, “আমাদের সুস্পষ্ট আহ্বান- বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালীন সরকার অতিদ্রুত কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে সংখ্যালঘু অমুসলিম ঘোষণা করে তাদের জন্য সংখ্যালঘু অধিকার নিশ্চিত করুক। এটি কোনো বিদ্বেষ নয়, বরং এটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার প্রদানের দাবি এবং ইসলামের সুরক্ষার দাবি। যা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা কারো ধর্মচর্চায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে হবে এমনকথা বলছি না। আমরা কাদিয়ানীদের নাগরিক অধিকার, তাদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কিন্তু আমরা চাই, তারা যেন ইসলামের নামে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে। তারা যেন নিজেদের ধর্ম স্বীয় নাম পরিচয়েই পালন করে এবং মুসলিম পরিচয়ে ইসলামের মর্মে যেন কোনরূপ আঘাত হানতে না পারে।”

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, “কাদিয়ানীদেরকে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রত্যক্ষ প্রশ্রয় দেওয়া হয়। এই চাপের কাছে আমাদের সরকার নতজানু হয়ে আছে।”

“আমরা কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছি। আমরা শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী, সেই জায়গা থেকে আমরা অব্যাহত দাবি জানিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করি— একটা পর্যায়ে গিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের মোকাবেলায়, অভ্যন্তরীন চাপ যখন বেশি হবে, তখন এই দাবি পূরণে সরকার বাধ্য হবে।”

খতমে নবুয়তের দাবিগুলো হলো—

১. কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সংখ্যালঘু অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।

২. তাদের ইসলামি পরিভাষা ব্যবহারে আইনগত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।

৩. সংবিধানে আকীদায়ে খতমে নবুয়তের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. ধর্মীয় শিক্ষা ও প্রচারে বিভ্রান্তি রোধে জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এসময় সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের সদস্য সচিব মাওলানা মহিউদ্দীন রাব্বানী, তমে নবুওয়াত আন্দোলন পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়াসহ আরও অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়:

বিজ্ঞাপন