ডোপামিন ডিটক্স: মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে নতুন অভ্যাসের পথে বিশ্ব

সিটিজেন জার্নাল ডেস্ক­

বিষয়:

ডোপামিন ডিটক্স মানে তাৎক্ষণিক তৃপ্তি প্রদানকারী কার্যকলাপ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিরত থাকার সময়কাল। ছবি: সংগ্রহীত

বর্তমান অতিসংযুক্ত ডিজিটাল যুগে আমাদের মনোযোগ যেন টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক–ইনস্টাগ্রামের নোটিফিকেশন, রিল–ইউটিউবের অবিরাম স্ক্রলিং, গেম কিংবা একসঙ্গে একাধিক কাজে ব্যস্ততা—সব মিলিয়ে প্রতিনিয়ত মানসিক উত্তেজনার চাপ। এই অভ্যাসগুলো যতটা নিরীহ মনে হয়, ততটাই মস্তিষ্কে বাড়তি ডোপামিন তৈরি করে, যা মুহূর্তের সুখ খুঁজতে বাধ্য করে।

এই অবস্থায় অনেকেই বেছে নিচ্ছেন ডোপামিন ডিটক্স—মনোযোগ ফেরানো ও মানসিক ভারসাম্য ফিরে পাওয়ার নতুন পথ।

ডোপামিন কী?

ডোপামিন হলো মস্তিষ্কের এমন এক রাসায়নিক, যা পুরস্কার, আনন্দ ও প্রেরণার সঙ্গে জড়িত। কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে লাইক পেলে, বা পছন্দের খাবার খেলে ডোপামিন নিঃসৃত হয়—আর সেই আনন্দ মানুষকে আবারও সেই অভিজ্ঞতা খুঁজতে শেখায়।

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন খুব দ্রুত এবং ঘন ঘন এই উত্তেজনা আমরা পেতে শুরু করি—যেমন অবিরাম স্ক্রলিং বা গেম—তখন মস্তিষ্ক ধীর, গভীর ও অর্থপূর্ণ আনন্দ অনুভবের ক্ষমতা হারাতে থাকে। তখনই দরকার হয় ডোপামিন ডিটক্সের।

ডোপামিন ডিটক্স কীভাবে কাজ করে?

ডোপামিন ডিটক্স মানে ডোপামিন কমানো নয়, বরং আকস্মিক উত্তেজনা থেকে বিরত থাকা—

  • সোশ্যাল মিডিয়া বিরতি
  • জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলা
  • ভিডিও স্ট্রিমিং কমানো
  • অনলাইন শপিং বন্ধ রাখা
  • অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বা জোরে গান থেকেও বিরতি

এতে মন তার স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পায়। বরং উৎসাহ দেওয়া হয়—

  • বই পড়া
  • ধ্যান
  • ব্যায়াম
  • প্রকৃতির সান্নিধ্য

ডোপামিন ডিটক্সের উপকারিতা

১. উন্নত মনোযোগ

ডোপামিন ডিটক্সের অর্থ হলো ক্রমাগত বিজ্ঞপ্তি এবং ডিজিটাল শব্দের টান ছাড়াই থাকতে পারা। এটি তখনই হয় যখন মন গুরুত্বপূর্ণ কাজে ভালোভাবে মনোনিবেশ করার জন্য জায়গা খুঁজে পায়।

২. মানসিক নিয়ন্ত্রণ

অতিরিক্ত উত্তেজনা মেজাজের পরিবর্তন বা বিরক্তির কারণ হতে পারে। ডিটক্সিং আপনাকে মানসিক ভারসাম্য এবং প্রশান্তি ফিরে পেতে সাহায্য করবে।

৩. উন্নত প্রেরণা

যখন আপনি সহজে আনন্দ পাওয়ার উপায়গুলো এড়িয়ে যেতে শুরু করবেন, তখন আপনার মস্তিষ্ক আবার প্রচেষ্টা-ভিত্তিক পুরষ্কারকে মূল্য দিতে শুরু করবে। এটি অভ্যন্তরীণ প্রেরণা এবং শৃঙ্খলা তৈরি করে।

৪. চাপ এবং উদ্বেগ কমানো

ডিজিটাল ওভারলোড থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলে তা আপনার মনের জন্য বিশ্রাম প্রদান করবে, যা চাপের মাত্রা হ্রাস করে এবং ঘুমের মান উন্নত করে।

৫. শক্তিশালী মননশীলতা এবং উপস্থিতি

স্ক্রিন থেকে ছুটি নেওয়ার অভ্যাস আপনাকে বাস্তব-বিশ্বের অভিজ্ঞতায় আরও উপস্থিত থাকতে, অন্যদের এবং আপনার আশেপাশের পরিবেশের সঙ্গে আরও ভালোভাবে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করবে।

বিষয়:

বিজ্ঞাপন